সুদীর্ঘ কর্মজীবনে শিক্ষানবিস কর্মী হতে শুরু করে বড় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে F. W. Taylor তার অভিজ্ঞতার ফসল হিসেবে যে নতুন ধরনের সংগঠন কাঠামোর রূপরেখা প্রদান করেন তাই কার্যভিত্তিক সংগঠন (Functional Foremanship) নামে অভিহিত । এরূপ সংগঠনের যে সকল সুবিধা লক্ষণীয় তা নিম্নরূপ :
১. কার্যক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান প্রয়োগ (Application of specialised knowledge) : সংগঠনে বিশেষজ্ঞদেরকে শুধুমাত্র উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচনা না করে তাদের ওপর সরাসরি নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। এতে বিশেষজ্ঞগণ স্বাধীনভাবে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারে। ফলে প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয় ।
২. স্বেচ্ছাচারিতা হ্রাস (Reduction of autocracy) :কার্যভিত্তিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন এরূপ সংগঠনে নিশ্চিত করা যায় । ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ বিশেষজ্ঞদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে তারা স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না। অন্যদিকে কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করায় বিশেষজ্ঞ কর্মীগণও কর্মক্ষেত্রে স্বৈরাচারী হওয়ার সুযোগ পায় না ।
৩. বিশেষায়ণ ও কর্মী উন্নয়ন (Specialization and employee development ) : এক্ষেত্রে কাজকে বিশেষজ্ঞতার ভিত্তিতে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করায় কার্যক্ষেত্রে যেমনি বিশেষায়ণের সুযোগ নিশ্চিত হয় তেমনি বিশেষজ্ঞের অধীনে কাজ করতে গিয়ে অধস্তনরা সরাসরি তার নিকট হতে অনেক কিছুই শিখতে পারে । ফলে অধস্তনদের মান উন্নীত হয় ।
৬. নমনীয়তা বৃদ্ধি (Increase in flexibility) : বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে এরূপ প্রতিষ্ঠানের সকল কাজ নির্বাহ হওয়ার কারণে তারা স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সাথে সহজেই সঙ্গতি বিধান করতে পারে । ফলে নমনীয়তা অর্জন সহজ হয়। এ ছাড়া এক্ষেত্রে কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করায় প্রয়োজনে কোনো নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠা বা কোনো বিভাগ বন্ধ করে দেয়া যায় ।
৫. নিয়ন্ত্রণে সহায়তা (Aid to controlling) : এরূপ সংগঠনে কাজগুলো ছোট ছোট বিভাগে ভাগ করায় একজন বিশেষজ্ঞ কর্মীর অধীন কাজের আওতা ছোট হয় । ফলে কার্যফল মূল্যায়ন সহজ হয় । প্রতিটি বিভাগের জন্য এমনকি ব্যক্তির জন্য কাজের পূর্ব নির্ধারিত মান নির্দিষ্ট থাকায় জবাবদিহিতাও সহজ হয়। যে কারণে প্রতিষ্ঠানে কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যায় ।